সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বলতেই আমরা এখন প্রায় সবাই ফেসবুককেই বুঝি। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী। তবে একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এর অপব্যবহারও। বাড়ছে ফেক অ্যাকাউন্টের সংখ্যাও। ফলে বিপদে পড়ছেন অনেকেই।
ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুক আইডি খোলার নিয়মে কিছুটা বাড়তি বাধ্যবাধকতা এনেছে ফেসবুক। তারপরও মানছে না কেউ। এ নিয়মে পরিচয় গোপন করে অ্যাকাউন্ট খোলার যে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেত সেটি এখন থেকে ফেসবুকে আর করা যাবে না। ফেসবুকের ফেক আইডির বিড়ম্বনা কমাতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।
সারা দেশে বিভিন্ন বেনামে ফেসবুক ফেক আইডি রয়েছে অসংখ্য, এর ব্যতিক্রম নয় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা। বেনামে ফেক আইডিগুলি নানা রকম উস্কানিমূলক তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে প্রতি নিয়ত।
রীতিমতো এসব আইডিগুলি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে তথ্য ছড়িয়ে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করছে। এই সমস্ত ফেক আইডির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে বহুবার। তারপরও আইনের তোয়াক্কা না করেই, নির্ধিয়ায় চালাচ্ছে এসব বেনামি আইডিগুলি।
উপজেলায় সম্প্রীতি কিছু আইডি সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। এতেই ক্ষান্ত হয়নি, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ থেকে শুরু করে সাংবাদিক পর্যন্ত সকলের নামে বিভ্রান্তমূলক তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে দিন রাত সমান তালে।
যে কোন নির্বাচন আসলেই এসব ফেক আইডির জন্ম হয় অনেক বেশি। বর্তমানে সবাই ফেসবুকমুখী, একটি তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সেটি অতি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়, হোক সে ভাল অথবা মন্দ। তবে মন্দের দিকে আকর্ষণ বেশি নেটিজেনদের।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আমরা এই বিড়ম্বনার শেষ দেখতে চাই। যদিও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিন্তু তা ধীরগতি। আইনের ধীরগতিতে ফেক আইডির মালিকগণ নির্ধিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সোশ্যাল পাড়ায়। তারা মনে করছে আমাদের তো কিছুই হচ্ছে না, যার ফলে তাদের সাহস আকাশচুম্বী।
অনেকেই মনে করেন, এদের দুই একজন কে ধরলে, শাস্তির আওতায় এনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অন্য কেউ এসব ফেক একাউন্ট চালানোর সাহস পাবে না।
নাম বলতে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী বলেন, আমার কাছে এক ফেক আইডি মেসেঞ্জারে দুই লক্ষ টাকা চায়, আমি দিতে অস্বীকার করায় আমার নামে ওই আইডি থেকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দেয় এতে আমার সম্মান ক্ষুণ্ন হয়।
আমি আইনের আশ্রয় নিলেও কোন সুফল মেলেনি। সাধারণ ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বলছেন, অতি দ্রুত এসব নকল আইডির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ফেসবুকের প্রতি অনীহা চলে আসবে।
সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হবে। ফেসবুক এখন সংবাদ পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। যদিও ভুল সংবাদের সংখ্যা বেশি কিন্তু কিছু সাংবাদিকদের আইডিতে সত্যিকারের সংবাদ পাওয়া যায় বলেই ব্যবহার করছি। যদিও ডিজিটাল নিরাপত্তা কঠোর আইন করা হয়েছে এইসব ফেক আইডির বিরুদ্ধে। তাতেও কোন সুবাতাসের হাওয়া বইছে না ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে খানসামা থানার ওসি (তদন্ত) মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় আমরা অনেকে ফেসবুক ফেক একাউন্টের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছি। অতি শীঘ্রই এসব ফেক আইডির মালিকদের ধরে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
নতুন আইডি খুলতে গেলে ব্যবহারকারীকে কমপক্ষে একটা প্রোফাইল ছবি ও আইডির জন্য বিশেষ কিছু তথ্য যোগ না করলে এখন থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা আর পাওয়া যাবে না ফেসবুকে। এমনটাই বলছে ফেসবুক কতৃপক্ষ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।